কদমতলীর কুখ্যাত মাদক কারবারি জরিনা বেগমের মাদক আস্তানা উচ্ছেদে সাঁড়াশি অভিযান, জরিনা বেগমের ৪ জন সহযোগীসহ আটক ১৪ জন, গাঁজা, ইয়াবা ও মাদক বিক্রির অর্থ উদ্ধার।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন মাদক আস্তানা উচ্ছেদ এবং মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন মাদক স্পটে সার্বক্ষণিক টহল ও নজরদারি অব্যহত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয়ের উপপরিচালক জনাব মোহাম্মদ মামুন এর নেতৃত্বে ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয়ের একটি চৌকস টিম এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম এর নেতৃত্বে ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয়ের অপর একটি টিম একযোগে গতকাল ০৯/০৬/২০২৪ তারিখ রাজধানীর কদমতলী এলাকার কয়েকটি মাদক আস্তানা উচ্ছেদে সাঁড়াশি অভিযান চালায়। এসময় কুখ্যাত মাদক কারবারি ও একাধিক মামলার আসামী জরিনা বেগম ও তার মেয়ে তানিয়া পালিয়ে গেলেও জরিনা বেগমের ৪ জন সহযোগীকে ৫০ পিস ইয়াবা, ২৫০ গ্রাম গাঁজা এবং মাদক বিক্রির ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত গাঁজা সেবন ও বিক্রয়কালে ১০ জন মাদকসেবীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড প্রদান করেন।
আসামীদের নাম ও ঠিকানা-আটককৃত ব্যক্তিদের পরিচয়ঃ-
1. মোছাঃ নদী (৩৫), স্বামীঃ মৃত হাসান, পিতাঃ মৃতঃ রহিম আলী খাঁ, মাতাঃ ছখিনা বেগম, ঠিকানাঃ স্থায়ীঃ গ্রামঃ আশা, থানাঃ মেহেন্দিগঞ্জ, জেলাঃ বরিশাল; বর্তমানঃ বড়ইতলা রেলগেইট, থানাঃ কদমতলী, জেলাঃ ঢাকা।
2. মোছাঃ ফরিদা (৫৫), স্বামীঃ মৃত আঃ আজিজ, পিতাঃ মৃত মনির মিয়া, মাতাঃ মৃত জবেদা খাতুন, ঠিকানাঃ স্থায়ীঃ গ্রামঃ চার আনি কলপা, থানাঃ কোতয়ালী, জেলাঃ ময়মনসিংহ; বর্তমানঃ বড়ইতলা রেলগেইট, গাজী ট্যাংক এর সামনের বস্তি, কদমতলী, ঢাকা।
3. মোছাঃ কুলসুম বেগম (৪০), স্বামীঃ মৃত মোঃ কামাল হোসেন, পিতাঃ মৃত হাফিজ উদ্দিন রারী, মাতাঃ আম্বিয়া খাতুন; ঠিকানাঃ স্থায়ীঃ গ্রামঃ লাকুটিয়া, থানাঃ বাবুগঞ্জ, জেলাঃ বরিশাল; বর্তমানঃ বড়ইতলা রেলগেইট, থানাঃ কদমতলী, জেলাঃ ঢাকা।
4. মোছাঃ রাবেয়া খাতুন (৫৫), স্বামীঃ মৃত বজলু, পিতাঃ মৃত আজাহার, মাতাঃ মৃত রাজু, ঠিকানাঃ স্থায়ীঃ গ্রামঃ কালীসুরী, থানাঃ বাউফল, জেলাঃ পটুয়াখালী; বর্তমানঃ বড়ইতলা রেলগেইট, (লিটনের বাড়ীর ভাড়াটিয়া), থানাঃ কদমতলী, জেলাঃ ঢাকা।
পলাতক ব্যক্তিদের পরিচয়ঃ
5. জরিনা আক্তার ওরফে মোছাঃ জরিনা বেগম (৫৬), স্বামীঃ মোঃ দেলোয়ার হোসেন, পিতাঃ মৃত মনির মিয়া ওরফে মৃত মনির হোসেন, মাতাঃ মৃত জোবেদা খাতুন; ঠিকানাঃ স্থায়ীঃ সাং- নারাইনধর, থানাঃ পূর্বধলা, জেলাঃ নেত্রকোনা; বর্তমানঃ সাং- শ্যামপুর হাড্ডি কারখানা, থানাঃ কদমতলী, জেলাঃ ঢাকা; পলাতক
6. মোসাঃ তানিয়া (২৪), পিতাঃ মোঃ দেলোয়ার হোসেন, মাতাঃ জরিনা বেগম; ঠিকানাঃ সাং- শ্যামপুর ওয়াসা রোড নতুন রাস্তা হাডি কারখানা সংলগ্ন, থানাঃ কদমতলী, জেলাঃ ঢাকা; পলাতক
যেভাবে অভিযান চালানো হয়-
গত ০৫/০৬/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ পরিদর্শক মোঃ শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম কদমতলী এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারি জরিনা আক্তার ওরফে মোছাঃ জরিনা বেগম (৫৬)-কে ৩০ (ত্রিশ) গ্রাম হেরোইনসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেন। এসময় মোছাঃ জরিনা বেগমের দুই ছেলে কদমতলী এলাকার মাদক ব্যবসায়ী রাব্বি (২৫) ও মোঃ রোহান (২২), মেয়ে মোসাঃ তানিয়া (২৪) এবং কদমতলী এলাকার মাদক ব্যবসায়ী মোঃ চাঁন বাদশা (২৩), পিতাঃ মোঃ রুবেল; অন্তর (২৬), পিতাঃ মোঃ বাবু ও মোঃ রিয়াজ (১৯), পিতাঃ মৃত আঃ রহমান এর নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা ৭০-৭৫ জন মহিলা ও পুরষ ইট-পাথর ও লাঠিসোটা নিয়ে অভিযানিক দলের সদস্যদের উপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে সিপাই হাফিজুর রহমান মারাত্মক জখম করে এবং জরিনা আক্তার ওরফে মোছাঃ জরিনা বেগম (৫৬)-কে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
পরবর্তী আসামীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয়ের উপপরিচালক জনাব মোহাম্মদ মামুন এর নেতৃত্বে ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয়ের একটি চৌকস টিম এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম এর নেতৃত্বে ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয়ের অপর একটি টিম একযোগে গতকাল ০৯/০৬/২০২৪ তারিখ রাজধানীর কদমতলী এলাকার বড়ইতলা রেলগেট, সিএনজি স্ট্যান্ড, ওয়াশা রোড, শ্যামপুর হাড্ডি কারখানা, শ্যামপুর ইকোপার্ক এবং শ্যামপুর রেলস্টেশন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালায়। অভিযানে জরিনা বেগমের ৪ জন সহযোগীকে ৫০ পিস ইয়াবা, ২৫০ গ্রাম গাঁজা এবং মাদক বিক্রির ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
পৃথক অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত গাঁজা সেবন ও বিক্রয়কালে মাদকসেবী ও মাদক বিক্রেতা ১। মোঃ মশিহাব (22), পিতা- মোঃ মানিক, ২। মোঃ হোসাইন (20), পিতা- চুন্নু, ৩। রুবেল আহাম্মেদ (৪৩), পিতা- আঃ কাদির, ৪। মোঃ রাহাত (২১), পিতা মোঃ নুরে আলস, ৫। মোঃ সুজন (21), পিতা- মোঃ বিল্লাল পেদা, ৬। মোঃ সোহেল রানা (২৪), পিতাঃ মোঃ জলিল ঘরামী, ৭। মোঃ মেহেদী হাসান (২১), পিতা- মৃত জামাল, ৮। মোঃ শাকিল (২২), পিতা- মৃত- শাহ আলম, ৯। মোঃ শাকিল (২০), পিতাঃ মোঃ কবির সরদার, ১০। মোঃ রাব্বি (১৮), পিতাঃ মোঃ রুবেল আহাম্মেদ-কে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড প্রদান করেন।
গ্রেপ্তারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে যা জানা যায়-
কদমতলী এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারি জরিনা আক্তার ওরফে মোছাঃ জরিনা বেগম ও তার পরিবার এবং সহযোগীরা মিলে বড়ইতলা এলাকায় মাদকের আস্তানা গড়ে তোলে। জরিনা বেগম (৫৬) এর বিরুদ্ধে ৪টি, তার ছেলে মাদক কারবারি রাব্বি (২৫) এর বিরুদ্ধে ৬টি, ছেলে মোঃ রোহান (২২) এর বিরুদ্ধে ৩টি, মাদক কারবারি মোঃ চাঁন বাদশা (২৩) এর বিরুদ্ধে ৪টি, মাদক কারবারি অন্তর (২৬) এর বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে। মাদক কারবারি মোছাঃ জরিনা বেগম ও তার দুই ছেলে বর্তমানে পলাতক আছে। তাদের গ্রেপ্তারে সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যহত আছে।
মতিঝিলে শুঁটকির মধ্যে পাচারকালে ৪০০০ (চার হাজার) পিস ইয়াবা উদ্ধার, আটক ১
ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয়ের উপপরিচালক জনাব মোহাম্মদ মামুন এর নির্দেশনায় সূত্রাপুর সার্কেলের পরিদর্শক মোঃ চান মিয়া এর নেতৃত্বে ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয়ের সূত্রাপুর সার্কেলের একটি চৌকস টিম গতকাল ০৯/০৬/২০২৪ তারিখ সকালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগরীর মতিঝিল থানাধীন বাংলাদেশ ব্যাংক উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে কক্সবাজার থেকে আগত মোঃ মোক্তার (৩৭), পিতাঃ মোঃ মোফিজ উদ্দিন-কে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার থেকে শুঁটকির ব্যাগের ভিতর বিশেষ কৌশলে পাচারকালে ৪০০০ (চার হাজার) পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।